bc

সাফল্যের গল্প

book_age18+
1
FOLLOW
1K
READ
like
intro-logo
Blurb

এগিয়ে যাওয়ার উক্তি গুলোর মূল কথা হল পেছনে না তাকিয়ে জীবনকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়া। শুধু পেছন ফিরে তাকিয়ে থাকলে অথবা এক জায়গায় থেমে থাকলে জীবনেও পিছিয়ে পড়তে হয়। জীবন একটাই আর সফল জীবনের মানেই হল শুধু এগিয়ে যাওয়ার গল্প।

আপনার জীবনটাও যেন এগিয়ে যাওয়ার আর সাফল্যের গল্প হয়ে ওঠে – সেকারণেই আমরা আজ কিছু এগিয়ে যাওয়ার উক্তি অথবা এগিয়ে যাওয়ার বাণী নিয়ে এসেছি। যাতে আপনি অতীতের গ্লানি মুছে থেমে না থেকে জীবনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা পান।

chap-preview
Free preview
আমার জীবন
পৃথিবীতে আসার সময় সাথে করে যা নিয়ে এসেছিলাম, তা হচ্ছে---প্রাণ। লাথি গুঁতা ধাক্কা খেয়ে খেয়ে সেই নিষ্পাপ নিরীহ নির্জীব প্রাণটিই হয়ে ওঠে---জীবন। জীবন অনেক কিছু শেখায়। চাইলেও শেখায়, না চাইলেও শেখায়। আমার চোখে, আমার ভাবনায়, আমার বোধে সেই শিক্ষাগুলির কিছু শেয়ার করছি। নিজে পড়ুন, অন্যকে পড়তে দিন। আপনার নিজের জীবন থেকে শেখা কথাগুলিও আমাকে লিখে জানাতে পারেন। আমি আপনার কাছ থেকে শিখতে চাই। আমার ইমেইল-অ্যাড্রেস :- sadhin24sk@yahoo.com ১. Money is the cheapest bargain! যে সমস্যাগুলি টাকা দিয়েই সমাধান করে ফেলা যায়, সেগুলির চাইতে সহজ সমস্যা আর হয় না। হাতে টাকা থাকলে সেগুলির সমাধান মুহূর্তের মধ্যেই হয়ে যায়। এমনকি হাতে টাকা না থাকলেও সেই সমস্যাগুলি ততটা যন্ত্রণা দেয় না, যতটা দেয় সেই সমস্যাগুলি যেগুলির সমাধান টাকার বিনিময়ে করা যায় না। যা-কিছু টাকা খরচ করেও ম্যানেজ করা যায় না, তার চাইতে ভয়াবহ সমস্যা আর নেই। ২. অতিনৈকট্য বরাবরই দূরত্বের সৃষ্টি করে। অপরদিকে অতিদূরত্ব শূন্যস্থান বাড়ায়, ভালোবাসা কমায়। ভালোবাসার মানুষটিকে কাছেও রাখতে হয় না, দূরেও রাখতে হয় না, যে দূরত্বে রাখলে তাকে দেখতে সুন্দর দেখায়, সে দূরত্বেই রাখতে হয়। সম্পর্ক বড় জটিল জিনিস। যত দিন তা সুন্দর থাকে, তত দিনই তার মাধুর্য টিকে থাকে। এর পর হয়তো সম্পর্ক টিকে থাকে কোনওমতে, তবে সে সম্পর্কে কোনও প্রাণ থাকে না। আর মজার ব্যাপার হলো, বড় বড় কারণে সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হয় না কিন্তু, সম্পর্কে দূরত্ব আসে একেবারেই ছোট ছোট কারণে, এমন কিছু কারণে যেগুলিকে হয়তো ‘কারণ’ বলেই বোঝা যায় না। ৩. অপছন্দের মানুষের সঙ্গ নরকবাসের সমান। অপছন্দের মানুষদের হয় জীবন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে হয়, নয়তো তাদের জীবন থেকে নিজেই যোজন-দূরত্বে সরে আসতে হয়। সব সময় তা করাটা সম্ভব হয় না, সেক্ষেত্রে সহজ উপায় হচ্ছে, মানসিকভাবে তার ধারেকাছেও না ঘেঁষা। মনের সকল জায়গা থেকে তার সম্পর্কিত সকল চিন্তাভাবনা ক্রমেই বের করে দিতে হবে। তার পাশে থেকেও তার কাছ থেকে অনেক দূরে সরে যেতে হবে। কাজটা প্রথম প্রথম কঠিন মনে হলেও ঠিকভাবে করতে পারলে খুব কাজে দেয়। ৪. আগামীকালটার কোনও গ্যারান্টি নাই, আজকের দিনটায় বেঁচে যে আছি, এটাই তো পরম সৌভাগ্য। আমি অনেক মানুষকে কোনও কারণ ছাড়াই দুম্‌ করে মরে যেতে দেখেছি। উপভোগ করার বেলায় কাল পরশু বলে কিছু নেই, আজটাই জ্যান্ত ও সত্য। আমি তো আর এমন বিশেষ কেউ নই যে আমাকে বাঁচিয়ে রাখতেই হয়েছে ঈশ্বরের, আমার চাইতে অনেক ভালো ভালো লোক মারা গেছেন তেমন কোনও কারণ ছাড়াই। আমি অপরিহার্য না হওয়া সত্ত্বেও এই যে বেঁচে আছি, এটা সৌভাগ্য ছাড়া আর কিছু নয়। যা করতে ভালো লাগে, তা করতে গিয়ে যদি পৃথিবীর কারও কোনও ক্ষতি না হয়, তবে তা করে ফেলাই ভালো। হয়তো তা করার সময়ই আর হবে না। ৫. আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীর কমপক্ষে অর্ধেকটা কষ্ট লাঘব করতে পারার ক্ষমতা না থাকলে, আত্মহত্যা করতে চাইছে, তেমন কাউকে আত্মহত্যায় যত বাধাই দেওয়া হোক না, সে তা কানে নেবে না। মানুষ কখন আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়? কেবল তখনই, যখন তার বেঁচে থাকতে অনেক যন্ত্রণা হয়। এতটাই যন্ত্রণা, যা সহ্যসীমার বাইরে। তা আপনি আমি বুঝতে পারব না, একমাত্র সে-ই বুঝতে পারছে সে যে কীসের মধ্যে আছে! এমন সময়, আরও বেশি বেঁচে থেকে আরও যন্ত্রণা ভোগ করার কোনও মানে তো নেই, এমন একটা ভাবনা থেকেই মানুষ আত্মহত্যা করতে চায়। সামনে আর কোনও পথই খোলা নাই, এমন অবস্থায় যে মানুষ আত্মহত্যা করতে চায়, যদি তাকে অন্তত একটা পথ দেখানো না যায় যে পথের কথা ভাবলে তার মধ্যে বেঁচে থাকার ইচ্ছেটা অন্তত জাগে, তা হলে আত্মহত্যা মহাপাপ, আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত ভুল, এমন হাজারো কথা বলেও তাকে আত্মহত্যার হাত থেকে বাঁচানো যায় না। পৃথিবীর সকল পাপ বা পুণ্যের চাইতেও বেঁচে থাকার তাগিদটা অনেক বড়। সে তাগিদ যার মধ্যে নেই, তাকে বাঁচানো খুব কঠিন। আমি ব্যক্তিগতভাবে কাউন্সেলিং করে এ পর্যন্ত ৭৬ জনকে আত্মহত্যার পথ থেকে ফিরিয়ে এনেছি। আমার অভিজ্ঞতা থেকেই কথাগুলি লিখলাম। ৬. আপনজনদের কষ্ট নিজের চোখে দেখা আর নিজের কলিজা ছিঁড়ে দুই টুকরো হয়ে যাওয়া---এই দুইয়ের মধ্যে তেমন কোনও পার্থক্য নেই। আর হ্যাঁ, তার চাইতে বড় কথা, যে মানুষটা আপনার কষ্ট দেখে কষ্ট পায় না, সে মানুষটা যদি আপনার আপন ভাইও হয়, সে কিন্তু আপনার আপনজন নয়। যে আপনার ব্যথায় সত্যিই ব্যথিত হয়, একমাত্র সে-ই আপনার আপনজন। বাকিরা সবাই পর, যদি সে তালিকায় ঘরের মানুষও থাকে, তাও সে আপন নয়। রক্তের সম্পর্কের মানেই কিন্তু আপনজনের সম্পর্ক নয়। এ জগত বড়ই বিচিত্র। এখানে পরের ছেলেও আপনের চেয়ে আপনজন হতে পারে, অথচ নিজের ছেলে সারাজীবনই পর, এমনকি শত্রু হয়েই থেকে যায়। ৭. আপনার জীবনে প্ল্যান ছাড়াই যে প্রেমটা হয়ে যায়, সেটাই সত্যিকারের প্রেম। প্ল্যান করে আর যা-ই হোক, প্রেম অন্তত হয় না। প্ল্যান করে যেটা হয় সেটা প্রেম নয়, চুক্তি। এ জীবনে যার একটা প্রেম হলো না, সে স্বর্গে প্রবেশের সুখটা পেল না। প্রেমে পড়লে যে এক ধরনের অনুভূতি কাজ করে শরীরে ও মনে, সেটার কোনও বর্ণনা হয় না, তা কেবলই নিজে অনুভব করার জিনিস। সে অপার্থিব অভিজ্ঞতার কাছে জীবন তুচ্ছ, মৃত্যু তুচ্ছ। ওই অনুভূতির জন্য সব কিছু করা যায়, যেকোনও সংস্কারের সাথে আপোষ করা যায়, শত ব্যস্ততার মধ্যেও সময় বের করা যায়, তা পাওয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকা যায় কয়েক জীবন। ৮. আপনি কারও অবর্তমানে তাকে আমার সামনে ঠিক যেভাবে উপস্থাপন করছেন, আমি বুঝে নেবো যে আপনি আমার অবর্তমানে অন্যের সামনে আমাকেও ঠিক একইভাবে উপস্থাপন করেন। কিছু লোক আছেন যাঁদের কাজই হচ্ছে অন্যের সম্পর্কে বানিয়ে বানিয়ে হলেও বাজে কথা বলা। নিশ্চিত থাকতে পারেন, সে অন্যের কাছেও আপনার সম্পর্কে বানিয়ে বানিয়ে বাজে কথাই বলে। আবার যারা আপনার কাছে কারও অজ্ঞাতে তার দোষত্রুটিগুলোকে লুকিয়ে রেখে তাকে উপস্থাপন করে, সে অন্যের কাছেও আপনাকে একইভাবে উপস্থাপন করবে। যার স্বভাবই অন্যের গীবত করা, তার কাছে আপনি আমি সবাই-ই কিন্তু সমান, সে সুযোগ পেলেই আপনার আমার গীবত করে ফেলবে। ৯. আপনি যদি স্বেচ্ছাচারী হন কিংবা কারও আবেগের জায়গাকে নিজের খুশিমতো ব্যবহার করেন, তবে তা সেই ব্যক্তিকে আপনার বিরুদ্ধে দিনদিন বিষিয়ে তুলে। এতে আপনার কাছের মানুষও মনে মনে আপনার কাছ থেকে একটা দূরত্বে অবস্থান করতে শুরু করে দেয়। একসময় এটা বিতৃষ্ণায় রূপ নেয়। এমনও দেখেছি, স্বেচ্ছাচারী মা রোগশয্যায় শুয়ে আছেন আর তাঁর ছেলে মায়ের প্রতি দায়িত্বপালন করতে যা যা করা দরকার, করছে, কিন্তু মায়ের প্রতি তার কোনও ভালোবাসা কাজ করছে না। অত্যাচারী, খিটখিটে স্বামী বা স্ত্রীর ক্রমাগত যন্ত্রণা সঙ্গীর মনে তার বিরুদ্ধে ঘৃণার জন্ম দেয়। তখন তীব্র ভালোবাসাও মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে। কাউকে ভালোবাসলে তাকে তার মতো করে বাঁচতে ও বাড়তে দেওয়া উচিত। ১০. আফসোস আর অপরাধবোধ এই দুইটা জিনিস মনের মধ্যে গোখরার বিষের চেয়েও ভয়ংকর বিষাক্ত অনুভূতির জন্ম দেয়। তবু এই দুটি থেকে মুক্ত হয়ে থাকা কোনও বিবেকসম্পন্ন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। মানুষ যেহেতু, সে ভুল বা অপরাধ করবেই। যাদের বিবেক নেই, তাদের মধ্যে সে ভুলের কারণে আফসোস জন্ম নেবে না, অপরাধের কথা মনে এলেও কোনও অপরাধবোধ কাজ করবে না। এ থেকে মুক্তির উপায় হচ্ছে, যে ভুল বা অপরাধ করার ফলে ওরকম অনুশোচনায় দগ্ধ হতে হচ্ছে, সে ভুল বা অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে কিছু পুণ্যকাজ করা। পুণ্যে পাপ কাটে। তখন মনে কিছুটা হলেও শান্তি পাওয়া যায়। ভালো কাজ আমাদের বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। ১১. আমরা যেভাবে রক্তের সম্পর্কের মানুষদের ক্ষমা করে দিই, ঠিক একইভাবে যদি রক্তের সম্পর্কের বাইরের জনদেরও ক্ষমা করে দিতে পারতাম, তা হলে পুরো পৃথিবীটাই একটা পরিবার হয়ে থাকত। কাউকে ক্ষমা করতে পারা শান্তি দেয়, যে মুখটা চিনি না সে মুখটাকে ক্ষমা করতে পারা আরও বেশি শান্তি দেয়। আমরা যদি ক্ষমা করতে না পারতাম, তা হলে আমরা এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে পারতাম না। এক ধরনের দহন আমাদের একেবারে শেষ করে দিত। ক্ষমা করে দিতে পারার ক্ষমতাই আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। ১২. আমাদের হৃদয়ের বাইরে কোনও ঈশ্বর থাকেন না। যে নিয়মকানুনের সৃষ্টি হৃদয়ের বাইরের ঈশ্বরকে তুষ্ট করার জন্য, সেগুলি হচ্ছে পৃথিবীর নিকৃষ্টতম নিয়মকানুন। ধর্মের নামে অন্ধতা মানুষে মানুষে হিংসা বাড়ায়, কুসংস্কার তৈরি করে। যে নিজের হৃদয়ে ঈশ্বরকে খুঁজতে পারল না, নিজের ভেতরের মন্দত্বকে দূর করে ভালোত্বের আবাদ করতে পারল না, তার চাইতে মূর্খ আর কেউ হয় না। সে যদি সারাদিনও প্রার্থনালয়ে পড়ে থাকে, তবুও স্রষ্টার অনুগ্রহ সে কখনওই পাবে না। ১৩. একজন মানুষ তার জীবনে কমপক্ষে দশবার সত্যিকারের প্রেমে পড়ে। আর যারা সংবেদনশীল ও সৃষ্টিশীল মানুষ, তারা জীবনে প্রেমে পড়ে অন্তত একশোবার। প্রেমে যে যত বেশি অসফল, সে তত বেশিবার প্রেমে পড়ার সুযোগ পায়। সফল প্রেম মানুষকে স্বস্তি দেয়, ব্যর্থ প্রেম মানুষকে শক্তি দেয়। আর কে না জানে স্বস্তির আয়ু বেশি সময় নয়। তাই প্রেমে ব্যর্থ মানুষই বেশি সময় নিজেকে টিকিয়ে রাখতে পারে, কেননা তার মধ্যে নতুন নতুন শক্তির জন্ম হতেই থাকে, যা তাকে বাঁচতে সাহায্য করে। মনের মধ্যে প্রেম থাকলে মানুষ নিজেকে তৈরি করার ও খারাপ থেকে নিজেকে দূরে রাখার অনুপ্রেরণা পায়। ১৪. কখনও কখনও একটা সত্য হাজারটা মিথ্যার চেয়েও ভয়ংকর হয়। এক্ষেত্রে সত্যের চেয়ে মিথ্যা নিয়ে বাঁচাই ঢের আনন্দের। কীরকম? একটু ভেঙে বলি। পৃথিবীতে কিছু কিছু ভয়ংকর সত্য আছে, যেগুলি মেনে নিয়ে কিংবা মাথায় নিয়ে বেঁচে থাকাটা আসলেই সম্ভব নয়। তখন মানুষের সামনে আত্মহত্যা বাদে আর কোনও পথই খোলা থাকে না। তাই যদি বেঁচে থাকতেই হয়, তা হলে সে সত্যকে ভুলে থাকতে হয়। আর ভুলে থাকতে হলে কিছু মিথ্যেকে জীবনে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে আসা ও সেগুলিকে পরম যত্নে লালন করা ছাড়া আর কিছু করার নেই। বেঁচে থাকাটাই সবচেয়ে বড় কথা। কোনওমতে বেঁচে থাকতে পারলে নিজের ও অনেকের জীবনকে সুন্দর করে দেওয়া যায়। ১৫. কমিটমেন্ট রক্ষা করতে পারবে না জেনেও যে কমিটমেন্ট দেয়, সেই আসল চরিত্রহীন। আমি যাকে একটা কথা দিলাম আজকে, কালকে বা আরও পরে যদি সে কথা থেকে আমাকে সরে আসতে হয়, তবে আমার চাইতে ব্যর্থ মানুষ বোধহয় আর নেই। যে মানুষটা তার কথার ঠিক রাখতে পারে না, তাকে শ্রদ্ধা করার কিছু নেই। আমার তো মনে হয়, তাকে মানুষ হিসেবে গণ্য করারই কিছু নেই। যে ব্যবসায়ী তার কমিটমেন্ট রক্ষা করতে পারে না, তার জন্য ব্যবসা করার চেয়ে বরং ভিক্ষা করে খাওয়াও অনেক সম্মানের। ১৬. কাউকে মিথ্যা বলে হাসানোর চেয়ে সত্য বলে কাঁদানোও অনেক ভালো। কেননা সত্য বলে কাঁদালে সে হয়তো কিছু সময়ের জন্য কষ্ট পাবে, তবে সারাজীবনের জন্য বড় কোনও দুঃখ পাওয়া থেকে বেঁচে যাবে। আর মিথ্যা বলে হাসালে সে হয়তো কিছু সময়ের জন্য ভালো থাকবে, তবে সারাজীবনই তাকে দুঃখ পেয়ে পেয়ে কাঁদতে হবে। সে কষ্টের যে অভিশাপ, তা মিথ্যা বলে হাসানোর পুণ্যের চেয়ে হাজার গুণে তীব্র। সে অভিশাপে পুড়তে হবে আপনাকেই। ১৭. কারও উপর রাগ জমিয়ে রাখলে রাগটা একসময় ঘৃণা হয়ে যায়। আর ঘৃণা মস্তিষ্কে ক্যানসারের মতো যন্ত্রণা দেয়। যার উপর রাগ হচ্ছে, যদি সে মানুষটা আমার প্রিয় কেউ হয় কিংবা এমন কেউ হয় যাকে ছেড়ে আমি থাকতে পারব না, তবে দরকার হলে তার গালে দুইটা চড় বসিয়ে দিয়ে হলেও রাগটা কমিয়ে ফেলা ভালো। তা না করলে চাপারাগ জমতে জমতে তা নিজেকে শেষ করে দিতে থাকে, পোড়াতে থাকে, সে দহন থেকে ভেতরে এক ধরনের ছটফট লাগে, সে ক্রোধের তীব্রতা বাড়তে থাকলে ঘৃণার জন্ম হয় এবং এই ঘৃণা থেকে সরে এসে কাউকে আবারও বুকে টেনে নেওয়া সত্যিই অনেক দুঃসাধ্য একটা কাজ। ১৮. কারও সাথে টাইমপাস করাটাও এক ধরনের প্রেম, কারণ টাইমপাস করতেও ন্যূনতম আকর্ষণ লাগে। যে কারও সাথেই টাইমপাস করা যায় না; কাউকে ভালো লাগে না, একটুও আকর্ষণ কাজ করে না তার প্রতি, তাও তার সাথে জীবনের সবচেয়ে দামি যে জিনিস---সময়, তা দিয়ে দিচ্ছি অবলীলায়, এমনটা হয় কি? একেবারেই অনুভূতিশূন্য হয়ে কারও সাথে গল্প করা, এটা করতে পারে যারা, তারা তো মানুষ নয়, তারা এক একটা ড্রাগন! ১৯. কেউ মন ভাঙে বলেই অন্য কেউ মন গড়ার সুযোগটা পায়। এতে কিন্তু মনের কোনও দোষ নেই। যার মন তারও কোনও দোষ নেই। যে ভেঙেছে, তারও কোনও দোষ নেই। সব দোষ আফসোসের। যদি কখনও আফসোসও না সে, তবে তো আরও ভালো, তখন কারও কোনও দোষই নেই। মন ভাঙাগড়ার খেলায় আফসোসের আগমন না ঘটলে সব কিছুই…ইটস ওকে! সবচেয়ে ভালো হয় যদি ধরে নেওয়া যায়---যা হয়েছে তা ভালোর জন্যই হয়েছে। ২০. জিনগত কারণে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি যেমন মানুষ আকৃষ্ট হয়, একইভাবে জিনগত কারণেই সমকামীরা সমলিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট হয়। সমকামিতার সাথে চরিত্রের কোনও যোগসূত্র নেই, এটা জিনগত কারণে ঘটে। সমকামিতা জীবনধারণের একটা ধরন মাত্র, আর কিছু নয়। সেখানেও ভালোবাসা আছে, সেখানেও প্রেম আছে। সবচেয়ে বড় কথা, কিছু মানুষ ওরকমভাবে থেকে ভালো আছে। যদি কেউ নিজের মতো করে কারও কোনও ক্ষতি না করে ভালো থাকে, তা সে যেভাবেই ভালো থাকুক না কেন, তাতে কার কী এসে যায়? তাকে অত জাজ করার কী আছে? ২১. জীবনকে উপভোগ্য করে তুলতে হলে প্রয়োজনীয় অর্থ লাগে, তার চাইতে বড় কথা, বন্ধনমুক্ত থাকতে হয়। যার একজন সঙ্গী আছে, জীবনকে উপভোগ করার অনেক রাস্তাই তার বন্ধ হয়ে গেছে, এটা ধরে নিতে হবে। তবে হ্যাঁ, মনের মতো সঙ্গী পেয়ে গেলে তখন অবশ্য উপভোগের অনেক রাস্তা চোখের সামনে খুলে যায়। আর যদি সঙ্গী মনের মতো না হয়, তবে সারাজীবনই তাকে বোঝার মতো মনে হয়। ২২. জীবনকে চিনতে হলে ‘ভালো ছেলে বা গুডবয়’ হয়ে কোনও লাভ নেই। আমি আমার জীবনে যে কয়েকটি ভুল করেছি, তার একটি হলো আমি সারাজীবনই গুডবয় হওয়ার চেষ্টা করে এসেছি। জীবনের বাঁকা দিকগুলি যে চিনতে পারে না, তার কাছে চলার সব রাস্তাই বাঁকা মনে হয়। ভালো ছেলেদের কোথাও কোনও জায়গা নেই, এমনকি মেয়েরাও ভালো ছেলেদের পাত্তা দেয় না। মেয়েরা পছন্দ করে ‘ছেলে’দের, ‘ভালো ছেলে’দের নয়। বেশিরভাগ মেয়েই ভালো ছেলেদের ছাগল ভাবে। আর কে না জানে, ছাগল তো কাঁঠালপাতা খায়, ভালোবাসা নয়। অতএব, মেয়েরা ধরেই নেয়, ভালো ছেলেদের খাবার ‘কাঁঠালপাতা’, ‘প্রেম’ নয়। ভালো ছেলেদের জন্য মেয়েদের মনে ‘আহা!’ থাকে, ‘আহহ্‌!’ থাকে না। জীবনের সৌন্দর্য উপভোগ করার ক্ষেত্রেও নির্ভেজাল ভালো ছেলেরা অনেক অনেক পিছিয়ে। জীবনের পথ সোজা নয়, বাঁকাও নয়, জীবনের পথ জীবনের পথের মতো। সে পথে চলতে গেলে ভালো ছেলে নয়, খারাপ ছেলেও নয়, স্রেফ ছেলে হওয়া দরকার। ২৩. জীবনে যে যত বেশি হিসেব করে চলবে, সে তত বেশি ভুল করবে। জীবন হিসেব দিয়ে চলে না, বিবেক দিয়ে চলে। আর? আবেগ দিয়েও চলে। তবে তত দিন পর্যন্তই আবেগ দিয়ে চলে, যত দিন পর্যন্ত বিবেকবোধ তৈরি না হয়। কী করলে কী হবে, কী করলাম বলে কী হলো, এসব হিসেব করতে গেলে পাগল হবার জোগাড় হয়! তখন হতাশা আর নৈরাশ্য ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায় না। যে মুহূর্তে বেঁচে আছি, সে মুহূর্তটাকে বিবেক দিয়ে বিচার করে ব্যবহার করাই ভালো। ২৪. দয়ালু মানুষই পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ও সুখী মানুষ। মানুষের ধনের হিসেব হয় সে কতটা আয় করতে পারল বা জমিয়ে রাখতে পারল, তা দিয়ে নয়, বরং কতটা অন্যদের মঙ্গলে ব্যয় করতে পারল, তা দিয়ে। এক ধনী ব্যক্তির গল্প বলি। তাঁর সম্পদের আর্থিক মূল্য ছিল অন্তত ৭০-৮০ কোটি টাকা। খুবই কৃপণ ধরনের মানুষ ছিলেন উনি। এতটাই কৃপণ যে বাসায় গেস্ট এলে তার পরই কারও হাতে ১০ টাকা দিয়ে দোকানে পাঠাতেন চায়ের দুধ কেনার জন্য। বাকি সময় দুধের পয়সা বাঁচাতে রং-চা খেতেন। জীবনে কাউকে কখনও ৫০০ টাকাও সাহায্য করেননি। একমাত্র ছেলেকেও পড়াশোনার খরচই দিতেন না, ছেলে অনেক কষ্ট করে নিজে উপার্জন করে পড়াশোনা করেছিল। পরবর্তীতে অবশ্য ছেলেও নিজের চেষ্টায় কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়। সে ছেলে বাবার সাথে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে ঢাকায় থাকত। বাবা অবশ্য এতে খুশি ছিলেন, কেননা তাঁর ধারণা ছিল ছেলের সাথে সম্পর্ক রাখলে ছেলে পয়সা চাইবে। তাঁর এক মেয়ে ছিল। একদিন মেয়ের স্বামী মেয়ের সাথে চক্রান্ত করে শ্বশুরকে ছাদ থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় সম্পত্তির লোভে। এলাকায় প্রচার করা হয় উনি হঠাৎ স্ট্রোক করে ছাদ থেকে পড়ে মারা গেছেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর সব সম্পত্তির মালিক হয় তাঁর মেয়ে। ২৫. দান ততক্ষণই দান, যতক্ষণ সেটা গোপন। দাতা আর গ্রহীতা ছাড়া তৃতীয় পক্ষ কেউ জেনে গেলে সেটা আর দান থাকে না, সেটা হয়ে যায় হয় বিজ্ঞাপন, নয়তো ব্যবসা (এই যেমন সিএসআর)। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখেছি, ঢাকঢোল পিটান না, কিন্তু অঢেল অর্থ দান করেন, এমন অনেক মানুষই আছেন। তাঁদের নাম কোথাও দেখবেন না, কাছের কারও কাছ থেকে হয়তো আপনি তা জানতে পারবেন। আপনারা কেউ কি জানতেন যে জীবনানন্দ দাশ তাঁর আয়ের বেশিরভাগ অর্থই গরীবদের দান করে দিতেন? অথচ তাঁর নিজের জীবনেই তেমন সচ্ছলতা ছিল না। দান করতে ধন যতটা লাগে, তার চাইতে অনেক বেশি লাগে মন। ২৬. দারিদ্র্য মানুষকে বুদ্ধিবান ও পরিশ্রমী করে তোলে, ঐশ্বর্য মানুষকে অলস ও বোকা করে তোলে। জীবনে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তারাই সবচেয়ে ভালো করে, যারা দারিদ্র্য দেখেছে, দারিদ্র্য ভোগ করেছে। যাকে পানির পাত্রটা নিজের হাতে বহন করে আনতে হয় দূর থেকে, সে পানি ব্যবহার করার সময় যতটা বুদ্ধিমত্তা ও বিবেক খরচ করে, যাকে সে পানিটা নিজেকে বহন করে আনতে হয়নি, সে ততটা করে না। রেডিমেড বিত্ত চিত্তের শুদ্ধতাকে দিনে দিনে ক্ষয় করে দেয়। এমনকি এমন ধরনের বিত্ত মানুষকে দিনদিন নির্বোধ ও অকারণেই আত্মতুষ্ট করে রাখে। ২৭. দারিদ্র্য মানুষের সবচেয়ে উপকারী দুঃখ। ছোটবেলায় যে যত বেশি দারিদ্র্য দেখে বড় হয়, তার মানসিক বয়স তার শারীরিক বয়সের তুলনায় তত বেশি বাড়ে। দুঃখ-দারিদ্র্য জীবনকে চিনতে শেখায়। যা-কিছু সাধারণ চোখে ধরা পড়ে না, তা-কিছু জীবনের বাইরের যে পর্দা, সেখানের ভেতরে গিয়ে দেখতে হয়। সে দেখার চোখটা তৈরি করে দেয় দারিদ্র্য ও তার সাথে কিছু দুঃখ। যে দারিদ্র্য দেখেনি, তার মধ্যে সহজে মানবিকতার বোধ জন্মায় না। ২৮. পুরুষমানুষ প্রকৃতিগতভাবেই বহুগামী মানসিকতার, মেয়েমানুষ জন্মগতভাবেই হিংসুটে প্রকৃতির। আর যে মেয়েটা বহুগামিতাকে সহজ চোখে নেয়, তার বহুগামিতা পুরুষের বহুগামিতাকে ছাড়িয়ে যায়। যে পুরুষের মনে হিংসার জন্ম হয়, তার হিংসার আগুনে অন্যরাও পোড়ে, সে নিজেও পোড়ে। একটা কথা মাথায় রাখা দরকার যে বহুগামিতার সাথে মানুষ হিসেবে খারাপ হওয়া বা ভালো হওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। বরং একগামী খারাপ লোকের চাইতে বহুগামী ভালো লোকের সাথে মেশা অনেক বেশি স্বস্তির। ২৯. পৃথিবীতে এককথার মানুষের সংখ্যা খুব কম। তাই লাভের আশায় কাউকে টাকা দেওয়ার চেয়ে বড় বোকামি আর হয় না। মানুষ ততক্ষণই আপনার সাথে ভালো, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার টাকা তার পকেটে ঢুকছে না। একজন মানুষ সত্যিকার অর্থে কেমন, তা বুঝতে হলে তাকে টাকা ধার দিতে হবে। যে মানুষ আর্থিক ব্যাপারে কমিটমেন্ট ঠিক রাখতে পারে, সে-ই প্রকৃত মানুষ। যে মানুষ কথার বরখেলাপ করে, তার চাইতে নিকৃষ্ট মানুষ আর হয় না। ধরুন, মুনাফা পাওয়ার আশায় আপনি কাউকে কিছু টাকা দিলেন। আপনার ভাষায়, এটার নাম বিনিয়োগ। এর পর যদি সে আপনাকে সময়মতো (চুক্তির শর্তানুযায়ী) লভ্যাংশ দিয়ে দেয় তো ভালো কথা, আর যদি না দেয়, তবে সে টাকার জন্য যে টেনশন এবং কষ্ট, তার দাম টাকার দামের চাইতে অনেক অনেক বেশি। আমি এমন একজনকে চিনি যিনি বেশ কিছু টাকা এক জায়গায় বিনিয়োগ করেছিলেন। সে টাকার বিপরীতে মাসিক যে লভ্যাংশ তাঁর পাওয়ার কথা, তা ঠিকমতো পাননি, এভাবে চলে গেছে মাসের পর মাস। নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও অনেক চেষ্টা করেও তিনি তাঁর টাকা পাচ্ছিলেন না। তাঁর প্রধান দুর্বলতা ছিল এই যে তিনি ভদ্রলোক গোছের মানুষ এবং মানুষকে সহজে সম্মান ও বিশ্বাস করে বসেন। একসময় টাকার টেনশনে তাঁর মাইল্ড-স্ট্রোক হয়, শারীরিকভাবে অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েন। সে টাকা তিনি এখনও উদ্ধার করতে পারেননি। যাঁকে তিনি টাকা ধার দিয়েছিলেন, তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী এবং সমাজের খুব গণ্যমান্য মানুষদের একজন। টাকা ধার না দিলে তাঁর আসল চেহারা জানা সম্ভব হতো না। আসলে টাকা প্রসঙ্গ এলে যতটা মানুষ চেনা যায়, অন্যভাবে তা সম্ভব নয়। আফসোসের ব্যাপার হলো, সেই টাকা বিনিয়োগ না করলেও উনার কিছুই এসে যেত না, ওটা ছিল তাঁর বাড়তি টাকা, হয়তোবা জীবদ্দশায় সেই টাকায় তাঁর হাতই দিতে হতো না, তা ব্যাংকেই পড়ে থাকত। এমনকি তিনি যদি মুনাফাটাও অত যন্ত্রণার পর পেয়ে যেতেন, তাও কিন্তু সে টাকাটা তিনি নিজে ভোগ করতে পারতেন না, ভোগ করতেন অন্য লোকজন। যোগে বিয়োগে কী লাভ হলো, বলুন তো? আসলে কী জানেন, আমদের চাওয়াটা অনেক বেশি। যা দরকার তাও চাই, যা দরকার নাই তাও চাই। চাই আর চাই। এই চাওয়াই আমাদের শান্তিতে বাঁচতে দেয় না। বিশেষ করে, যা দরকার নাই, সেটি চাওয়া কমিয়ে দিতে পারলে জীবনটা অনেক সুন্দর হয়ে ওঠে। ৩০. পৃথিবীতে সবচেয়ে সুখী তারাই যাদের---হারানোর কিছু নেই, পালানোর কোনও দায় নেই, ভাববার কোনও বিষয় নেই, লুকানোর কোনও সম্পদ নেই, কষ্টের কোনও অনুভূতি নেই, কোনও কিছুর জন্যই কোনও তাড়া নেই…এই যেমন ধরুন, বদ্ধপাগল যারা, তারাই সবচেয়ে সুখী। যদি ওরকম বদ্ধপাগল হয়ে যেতে না পারি, তবে আমি কেন সুখী নই আমি কেন সুখী নই বলে চেঁচিয়ে কোনও লাভ নেই। সবার দুঃখ আছে---কেউ বলে, কেউ বলে না। যার যার দুঃখ তার তার কাছে অনেক বড়। আমার দুঃখ আমাকে কতটা দুঃখী করে রেখেছে, সে খোঁজ আপনি কোনও দিনই পাবেন না। হয়তোবা আমার দুঃখের কথা জানলে ও তা অনুভব করতে পারলে আপনার নিজের দুঃখকে আপনার কাছে তুচ্ছ মনে হবে। যারা দুঃখের মার্কেটিং করে না, লুকিয়ে রাখে, কান্না গিলে গিলে হাসিমুখে বাঁচে…সে মানুষগুলির দুঃখ সবচাইতে বেশি। দিনের শেষে আইয়ুব বাচ্চুর সেই গানটাই সত্য…আসলে কেউ সুখী নয়! ৩১. পৃথিবীর বেশিরভাগ ধনীই তাদের উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া সম্পত্তির উপর দাঁড়িয়ে বড়লোক হবার সৌভাগ্য অর্জন করে। আবার আরও কিছু মানুষ আছে, যাদের পরিবারের কেউ অনেক অর্থ উপার্জন করে এবং তারা সে অর্থ নিজের খুশিমতো তেমন কোনও চিন্তাভাবনা না করেই খরচ করতে পারে। তাদের বন্ধুবান্ধব ও পরিচিতজন তাদের রাজার সম্মান দেয়। তারাও এক ধরনের ধনী। তারা নিজেদের জীবনকে ইচ্ছেমতো উপভোগ করতে পারে, যদিও তাদের উপার্জন এক পয়সাও নয়। এটাও বিরাট সৌভাগ্য। ৩২. পৃথিবীর বেশিরভাগ সংসার টিকে থাকে একমাত্র সন্তানের কথা ভেবে। বেশিরভাগ সংসারে দাম্পত্য ভালোবাসা বা টান বলে তেমন কিছু থাকে না, সম্পর্কের মাঝে কেবল সন্তানই থাকে। সন্তানের কারণেই সম্পর্ককে টেনে নিতে নিতে তা একসময় অভ্যস্ততায় দাঁড়িয়ে যায়। প্রেমে নয়, ভালোবাসায় নয়, সংসার টিকে থাকে স্রেফ অভ্যস্ততায়। আর একটা ব্যাপার আছে, তা হলো সংসারটা ভেঙে গেলে তখন কী হবে, কে কী বলবে, নতুন পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেব কীভাবে, যদি সত্যিই এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসি তখন কী হবে, এমন নানান চিন্তা ও উদ্বেগের কারণে অনেক সম্পর্কই শেষ পর্যন্ত এক্সট্রিম কিছুর দিকে গড়ায় না, মেনে নিয়ে ও মানিয়ে নিয়ে টিকে থাকে দিনের পর দিন। ৩৩. প্রতারক চিনে রাখতে হয়। ওদের দেখে বা ওদের সাথে মিশেও ওদের সহজে চিনতে পারবেন না আপনি। ওদের ব্যবহার অমায়িক, আচরণ খুবই ভদ্র। ওরা কখনও মাথা গরম করে না, ওদের ধৈর্য অসীম। আপনি যদি ওদের গালাগালি করেন, ধরে পিটানও, তাও ওরা আপনার সাথে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়েই কথা বলবে। ওদের চাইতে ঠান্ডা মেজাজের মানুষ আপনি পৃথিবীতে বেশি পাবেন বলে মনে হয় না। ওরা কখনও কখনও নানান কথা বলে আপনাকে ভয় দেখানোর বা আপনার নার্ভ দুর্বল করার চেষ্টা করবে, বিশেষ করে, আপনি যখন আপনার পাওনা টাকা ফেরত চাইবেন, তখন। তবে ওতে কিছুতেই ভয় পাবেন না, ওদের পাত্তা দেওয়ার কিছুই নাই, ওরা রাস্তার কুকুরেরও অধম। ওদের অনেকেই ভীষণ মেধাবী ও সৃষ্টিশীল। অনেক সুন্দর করে কথা বলতে পারে, অনেক সুন্দর করে লিখতেও পারে। ভণ্ডামিকে যদি কেউ শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যায়, তবে সে হচ্ছে এই প্রতারক। বাহ্যিকভাবে খুবই মিষ্টি ব্যক্তিত্বের অধিকারী ওরা। আপনার কাছ থেকে টাকা নিতে বা অন্য কোনও ফাঁদে ফেলতে আপনাকে বলতে পারে না, এমন কোনও মিথ্যা কথা দুনিয়ায় নাই। ওদের সাথে কথা বলার সময় মনে হবে, আপনার সব কাজ ওরা বুঝি এখুনিই করে দেবে। প্রতারকরা---নিজের মাকে মেরে ফেলা থেকে শুরু করে অভুক্ত থাকার গল্প…কী নেই যা ওরা বিশ্বাসযোগ্য উপায়ে বলতে পারে না! ৩৪. প্রতিদান পাবার আশা ছাড়া যে দান, সেটাই ত্যাগ। দানে প্রতিদান থাকলে সেটা ত্যাগ নয়, সেটা ‘গিভ অ্যান্ড টেক’ মাত্র। তা হলে কি দানের বিনিময়ে কিছুই পাওয়া যায় না? হ্যাঁ, যায়। নিশ্চয়ই যায়। তা হচ্ছে শান্তি, স্বস্তি, সুখ। মনের শক্তি বাড়াতে এই তিন জিনিসের চাইতে ভালো কিছু আর হয় না। এই তিনটি জিনিস টাকা খরচ করেও পাওয়া যায় না। দানের ফলে মানুষের সমৃদ্ধি বাড়ে, এর প্রধান কারণ হলো বর্ধিত আত্মবিশ্বাস ও কর্মস্পৃহা। মানুষ অল্প টাকায়ও চলতে পারে, আবার বেশি টাকায়ও চলতে পারে। যে অর্থ দান করা হয়, তা হয়তো এমন কোনও কাজে খরচ হয়ে যেত, যে কাজে খরচ না করলেও চলে। ৩৫. প্রিয় মানুষের সাথে সেক্স পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর বিষয়গুলির একটি। কারও সাথে সেক্স করতে হলে তাকে প্রিয় মানুষ হতেই হবে, এমন নয়, তবে যদি প্রিয় মানুষটির সাথেই সেক্স করা হয়, তখন যে শান্তি আসে, সে শান্তি আর অন্য কোনও কিছুতেই পাওয়া যায় না। পৃথিবীর মাত্র কয়েকটি অকৃত্রিম সুখের মধ্যে সেক্স একটি। সেক্স করতে ভালোবাসা লাগেই, তা নয়, তবে সেক্সের সাথে ভালোবাসা যুক্ত হলে তার চাইতে পরম স্বস্তি আর হয় না। সে অনুভূতি বড় স্বর্গীয়। ৩৬. প্রেমানুভূতি সেক্সের মতোই আনন্দের। প্রেমে পড়ার মতো এত আনন্দের অনুভূতি পৃথিবীতে আর কিছু নেই। কাউকে সারাজীবন ভালোবেসে যাওয়ার মধ্যে যে অদ্ভুত সুখ আছে, কেবল তা পেতেও বেঁচে থাকা যায়। প্রেমের অনুভূতি খুব পবিত্র একটা অনুভূতি, এর চাইতে ভালো কিছু আর হয় না। মানুষে মানুষে নয় শুধু, মানুষের সাথে অন্য যেকোনও সত্তার প্রেমও অনেক তৃপ্তি দেয়। আমার সবচাইতে প্রিয় যে কলমটি, সে কলম অন্য কারও পকেটে দেখলে সেটির প্রতি আমি এক ধরনের টান অনুভব করি, এটাও কিন্তু এক ধরনের প্রেম। প্রেমের ক্ষেত্রে দুইটি সত্তা একে অপরকে টানে, একে অপরের জন্য ছাড় দিয়ে বাঁচে। একজন ধার্মিক ব্যক্তির সাথে স্রষ্টার যে প্রেম, তা থেকে যে অনুভূতি সেই ব্যক্তির মনে জন্মে, তার বিশালতা ও সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। যদি মানব মানবীর প্রেমের কথাও ধরি, তাও ব্যাপারটা সত্য। কাউকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসলে যে অনাবিল সুখ ও শান্তি মনের গভীরে ছড়িয়ে থাকে প্রতি মুহূর্তে, তার সাথে পৃথিবীর অন্য কোনও কিছুর তুলনা হয় না। ৩৭. বিয়ে করেই মানুষ সবচেয়ে বেশি অসুখী হয়, যদিও মানুষ ভাবে তার উল্টোটা। আসলে বিয়ে করার আগ পর্যন্ত বিয়ে করাটাকে খুবই মধুর একটা অভিজ্ঞতা হিসেবে কল্পনা করতে ভালো লাগে। প্রজনন ও অবাধ যৌনতা ছাড়া বিয়ের আর তেমন কোনও সুবিধা নেই। আর একটা সুবিধার কথা অনেককেই বলে থাকেন, তা হলো সন্তানের প্রতি বাৎসল্য। তবে তা উপভোগ করতে গিয়ে যদি অনেকখানি ছাড় দিতেই হয়, তবে এক একটা সময় মনে হয়, সন্তানের মায়া ত্যাগ করতে পারলে বড্ড বাঁচা বেঁচে যেতাম! সে আমায় ছেড়ে চলে যাক, যদি তার সাথে জোর করে আমাদের সন্তানটিকে নিয়ে যেতে চায় তো যাক না! দিনের পর দিন এই মেনে নেওয়া আর মানিয়ে নেওয়ার নাম আর যা-ই হোক, কিছুতেই সুখ নয়। ৩৮. বিয়ের পর একজন মানুষের আশিভাগ সুখ নির্ভর করে তার পার্টনারের উপর, বাকি বিশভাগ অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার উপর। অর্থই অনর্থের মূল…কখন? যখন পকেটে অর্থ থাকে। পকেটে অর্থ না থাকলে চারিদিকে কেবলই দারিদ্র্য থাকে---অর্থ বা অনর্থ, কোনওটাই থাকে না। দরিদ্র মানুষ অনর্থের হিসেব করতে বসে না, দুমুঠো খাবার জোগাড় করতেই ওদের সমস্ত সময় কেটে যায়। চাকরিকে গালি দিতে চাইলে যেমন সবার আগে একটা চাকরি লাগে, তেমনি অর্থকে নিরর্থক বলতে চাইলে সবার আগে অর্থটাই লাগে। ৩৯. বুদ্ধিমান ও জ্ঞানী মানুষ পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান বস্তু, তাই ওরকম কাউকে চাইলেই পাওয়া যাবে, এমনটা আশা করাটা বোকামি, কেননা প্রতিটি মূল্যবান বস্তুই খুব দুষ্প্রাপ্য। মাথায় রাখতে হবে, যা সহজে পাওয়া যায়, তার মূল্য খুব কম। একজন বুদ্ধিমান বা জ্ঞানী ব্যক্তির সাহচর্য লাভ করার জন্য যেকোনও ধরনের ত্যাগ করতে তৈরি থাকা দরকার। যাকে হাত বাড়ালেই পাওয়া যায়, তার কাছ থেকে শেখার তেমন কিছু নেই। যাঁর কাছ থেকে শেখার কিছু আছে, তাকে পেতে হলে একটু কাঠখড় পোড়াতেই হবে, তাঁকে দেখলে মনে হবে যে তিনি বোধহয় একটু অহংকারী আর মুডি, এইসব ব্যাপার মেনে নিতে হবে। যার মাথায় ‘মাল’ আছে, তার একটু ‘ভাব’ থাকবেই। কিচ্ছু করার নেই। ৪০. বোকার সাথে কখনও স্বর্গেও যেতে নেই, কেননা তার বোকামি স্বর্গচ্যুতির কারণ হতে পারে। যারা বোকা, তারা শুতভাগ আন্তরিক ও সতর্ক থাকা সত্ত্বেও নিজের অজ্ঞাতেই আপনাকে এমন এক পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিতে পারে, যেখান থেকে বেরিয়ে আসতে আপনাকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে। বোকার সাথে বন্ধুত্ব করার চাইতে বরং একা থাকাও অনেক অনেক ভালো। বোকারা নিজের অজান্তেই অন্যকে বিপদে ফেলে দেয়। বিব্রত ও বিরক্ত হওয়া থেকে নিজেকে বাঁচাতে বোকার সঙ্গ ত্যাগ করা উচিত। ৪১. ভালোবাসার অনুভূতি পৃথিবীর সবচেয়ে সুখের অনুভূতি, এই অনুভূতিটাকে আমি স্বর্গ বলি। জীবনে কখনও মরে যাইনি বলে মৃত্যুর পরের স্বর্গের খোঁজ আমি এখনও জানি না, তবে ভালোবাসায় ভেসে যাওয়া মনের মধ্যে আনন্দের যে প্রস্রবণ বইয়ে দেয়, সে অনুভূতির চাইতে ভালো কিছু পাওয়ার লোভ আমার নেই। সে তৃপ্তি ও শান্তির কোনও তুলনায় হয় না। ৪২. ভুল একবার করলে সেটা ভুল, দ্বিতীয়বার করলে অন্যায়, একই ভুল তৃতীয়বার করলে সেটা রীতিমতো অপরাধ। কেউ ভুল করলে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া যায়, অন্যায় করলে তাকে শুধরে নেওয়া যায়, কিন্তু অপরাধ করলে তাকে ছেড়ে চলে যাওয়াই ভালো। যদি ভেবে বসে থাকেন, সে একসময় ‘ঠিক’ হয়ে যাবে, তবে আমি বলব, আপনি বোকার স্বর্গে বাস করছেন। আপনার ভবিষ্যতটা আপনি নিজের হাতে নষ্ট করে দিচ্ছেন হাসিমুখেই। অপরাধীর সাথে থাকার চেয়ে একা থাকা অনেক ভালো। ৪৩. মানুষ আর নিকৃষ্ট মানুষ এই দুইয়ের মধ্যে বড় পার্থক্য থাকে রুচিশীলতায়। রুচিহীন মানুষ আমার চোখে নিকৃষ্ট মানুষের সমান, এমনকি রুচিশীল প্রাণীও আমার কাছে রুচিহীন মানুষের চেয়ে প্রিয়। যার রুচিবোধ নেই, তার সাথে মিশতে গেলে কত জায়গায় যে অপদস্থ হতে হয়, তার কোনও ইয়ত্তা নেই। যার রুচি বাজে, তার যত টাকাই থাক না কেন, সে যে পর্যায়ের মানুষই হোক না, তার সাথে মেশা মানেই নিজের রুচি ও ব্যক্তিত্বকে নষ্ট করা। ৪৪. যাকে আমি কখনও গ্রহণ করতে পারব না, তাকে কোনও ধরনের আশ্বাস দেওয়াটাও এক ধরনের অপরাধ। তবে কেউ যদি আশ্বস্ত না হয়েও কারও জীবনে থাকতে চায়, তবে ইচ্ছে হলে জীবনে তাকে জায়গা দেওয়া যেতে পারে। পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে গড়ে ওঠা দুইজন মানুষের মধ্যকার সম্পর্কে পূর্ণ সততা থাকুক, শতভাগ স্বচ্ছতা থাকুক। ভালোবাসার চাইতেও কখনও কখনও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বড়। শ্রদ্ধা নষ্ট হয়ে গেলে ভালোবাসাও ধীরে ধীরে মরে যায়। ৪৫. যে জীবনটা আমাদের পাত্তাই দেয় না, সেটাকে এত সিরিয়াসলি নেবার কিছুই নেই। মৃত্যুকে তো আর আটকাতে পারব না, তো জীবনকে নিয়ে এতটা ভাববার কী আছে? মৃত্যু কখন যে এসে যাবে, তাও তো আমরা কেউই জানি না। জন্মের কোনও গ্যারান্টি নেই, কিন্তু মৃত্যুর গ্যারান্টি শতভাগ। যে লোকটি মারা গেল, সে তার জীবনটাকে মৃত্যুর আগে আনন্দে কাটিয়েছে কি না, এটা নিয়ে পৃথিবীর কারও কোনও মাথাব্যথা থাকে না। প্রতিটি মুহূর্ত পরিপূর্ণভাবে কাটানোর চেষ্টার নামই জীবন। ৪৬. যে তোমার চোখের শব্দহীন ভাষা পড়তে পারে না, তার কাছে তোমার মুখের হাজারটা চমৎকার শব্দের বাক্যও তেমন গুরুত্ব বহন করে না। চোখ তো কখনও মিথ্যে বলে না, তাই চোখের আন্তরিক ভাষা পড়তে জানে যে, সে-ই তোমার মনের সত্যিকার খোঁজটা রাখে বা রাখতে চায়। যদি এমন কাউকে ভালো লেগে যায়, চেষ্টা করবে তাকে এই ছোট্ট জীবনটাতে রেখে দিতে! ছোট্ট একটা জীবন, প্রিয় কারও সাথে কাটাতে পারার মতো সৌভাগ্য আর কী আছে? ৪৭. যে প্রেম যত নিষিদ্ধ, সে প্রেম তত গভীর। বৈধ প্রেম হারিয়ে যাওয়ার ভয় তেমন নেই, কিন্তু অবৈধ প্রেম টিকিয়ে রাখাই তো বড় দায়! সমাজের চোখে নিষিদ্ধ যে প্রেম, তার প্রতি মানুষের এক ধরনের টান থাকে। খাঁচার বাঘ তো আর কেউ শিকার করতে চায় না, বনের বাঘের পেছনেই তো শিকারি ছুটে বেড়ায়। যা সহজে পাওয়া যায়, তার চাইতে যা সহজে হারিয়ে ফেলা যায়, তার প্রতি মানুষের ভালোলাগা বেশি কাজ করে। নিষিদ্ধ প্রেমের দহনে মানুষ যতটা পুড়তে থাকে দিনরাত্রি, তার সামান্যতম দহনও বৈধ প্রেমের বেলায় দেখা যায় না। জীবনে যা কখনও পাব না, তা-ই পাওয়ার আকাঙ্ক্ষায় আমি বিভোর হয়ে থাকি। ৪৮. যে মানুষ জীবনে যত বেশি কষ্ট পায়, সে তত বেশি বাস্তবজ্ঞানসম্পন্ন ও শক্ত ধাঁচের হয়। জীবনে কিছুই না পাওয়ার চেয়ে কষ্ট পাওয়াও অনেক ভালো। আঘাত পেতে পেতে যে কখনও মৃত্যুর কাছাকাছি চলে যায়নি, সে বাঁচার মজাটা বুঝবে না। সুখকে উপভোগ করতে হয় সময় থাকতেই, এটা খুব ভালোভাবে বুঝতে হলে কিছুটা হলেও কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। যে ভালোবাসা কষ্ট ছাড়াই এসেছে, সে ভালোবাসা খুব সহজেই হারিয়ে যায়, কেননা সে ভালোবাসার দামটা ঠিক চোখে পড়ে না। ভালোবাসার মূল্য যে কী, তা তাকে জিজ্ঞেস করে দেখো যে হাতের মুঠোয় ভালোবাসা পেয়েও নিজেরই ভুলে তা হারিয়ে ফেলেছে! ৪৯. যৌবনেই সব সুখ উপভোগ করে নিতে হয়, বয়সকালে ইচ্ছে বা সুযোগ কোনওটাই থাকে না। তবে বেশিরভাগ মানুষই তা করতে পারে না। যেসব পিছুটানের কারণে পারে না, প্রায়ই দেখা যায়, সেসব পিছুটান আসলে হয় অজুহাত ছিল কিংবা ততটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না, যতটা মানুষ ভাবে। তবু প্রায়ই কিছু করার থাকে না, কেননা আমরা সাধারণত সংস্কার বা পিছুটানের জাল থেকে নিজেদের বের করে নিয়ে আসতে পারি না। আপনি আপনার জীবনটাকে উপভোগ না করলে একমাত্র আপনিই আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবেন, ওতে কারও কিছু এসে যাবে না। ৫০. শূন্যস্থান কখনওই শুন্য থাকে না, কেউ না কেউ এসে তা পূরণ করে দেয়। সেটা মেনে নিতে হয়, মেনে নিতে না চাইলে আগেই সে পূরণ হওয়ার রাস্তাটি বন্ধ করে দিতে হয়। কাউকে শূন্যস্থানে রেখে যাব, আবার সে শূন্যস্থান অন্য কেউ এসে পূরণ করলে তাও মেনে নিতে পারব না, তা কী করে হয়? জীবনে কেবল একটা মানুষের জন্যই আসা-যাওয়ার দরজা খোলা রাখলে অনেক কষ্ট পেতে হয়, সে দরজা খোলা থাক সে মানুষের জন্য যে সেই দরজায় ওপাশের ঘরটির মর্যাদা বোঝে। Sharing Is Caring

editor-pick
Dreame-Editor's pick

bc

Claimed by my Brother’s Best Friends

read
784.3K
bc

Secretly Rejected My Alpha Mate

read
17.8K
bc

Dominating the Dominatrix

read
52.6K
bc

The Luna He Rejected (Extended version)

read
553.0K
bc

The Slave Mated To The Pack's Angel

read
378.2K
bc

The Lone Alpha

read
123.0K
bc

The CEO'S Plaything

read
15.2K

Scan code to download app

download_iosApp Store
google icon
Google Play
Facebook