bc

পারিবারিক সম্পর্কিত বাস্ত গল্প।এর চরিত্রগুলো বাস্তবতার সাথে কিছুটা মিল থাকায় লেখিকার আত্নজীবনী বলা চলে।

book_age16+
0
FOLLOW
1K
READ
drama
like
intro-logo
Blurb

#রংধনু

তাবাস্সুম রিয়ানা

পর্বঃ০১

___________

স্বপ্নচুড়া এলাকার রংধনু নিবাস বাড়িটির মালিক ছিলেন ইদহান রহমান।রক্ত ঘামে গড়েছিলেন এই শান্তির নিবাস। দু পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক হয়েছিলেন।মৃত্যুর আগে সম্পূর্ন সম্পদ ছেলে মেয়েদের দিয়ে যান যেন ওনার মৃত্যুর পরবর্তি সময়ে কোন দ্বন্ধ সংঘাতের সৃষ্টি না হয়।কিন্তু যখন সত্তুর বছর বয়সে মারা গেলেন তখনই প্রচন্ড লোভ উৎরে উঠলো ছোট পুত্র ইহসান রহমানের ভেতর।ইদহান রংধনু নিবাস পাঁচ কাঠা জমি আর পুকুরটা লেখে দিয়েছিলেন বড় সন্তান ইকরামের নামে।কিন্তু ইহসান রহমান মেনে নিতে পারেননা।যেখানে তাকে সম্পত্তি কোন অংশে কম দেয়া হয়নি।বড় ভাইয়ের আগে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন ইহসান রহমান।বিত্তশালী পরিবারের মেয়ে ফারিদা খানমকে বিয়ে করে নেন।একমাত্র কন্য হবার সুবাদে ফারিদা প্রচুর সম্পত্তি পান পিতার কাছ থেকে।কিন্তু ইহসান রহমান এতো সম্পত্তির পর ও কোনভাবেই ভাইয়ের সম্পত্তি থেকে নজর সরাতে পারেননা।

ইকরাম রহমান ছিলেন বেশ সরল মনের কম শিক্ষিত এবং ভাই বোনের প্রতি দূর্বল।ওনার স্ত্রী জুলেখা বানু দরিদ্র পরিবারের সন্তান ছিলেন।ইহসান রহমান সেদিন ভাইয়ের গৃহে চলে আসেন উকিল সমেত।চেয়ে বসেন পুরো পাঁচকাঠা জমি।ইকরাম রহমানের মাথায় বাজ পড়ে।কিন্তু ওনাকে অনেকটাই অবাক করে দিয়ে ইহসান রহমান বলেছিলেন,

''এত সম্পত্তি দিয়ে কি করবে?আমাকে দিয়ে দাও।নাহলে এই বাড়ি খালি করবে।আমি বিক্রী করবো ।"

ইকরাম ভেঙ্গে পড়েন।ছোট ভাইকে অনুনয় করে বলেন,

''এ বাড়ি বাবার হাতের।এমনটা করিস না।"

''এতো কথা বলিও না।সব তোমার চাল বুঝি তো।বাবার ঘরটাকে তুমি হাতানোর ধান্দা করছো মনে করছো কিছু জানিনা আমি তাইনা?"

ইকরাম প্রচন্ড অবাক হন।এ লোক তার ভাই হতে পারেনা।কিভাবে কথা বলছে সে?ভাইকে অবিশ্বাস করছে।ইহসান নিজের সিদ্ধান্তে অটল।অনেক জোরাজুরি করে বাড়িটা আর এককাঠা জমি বাঁচালো ইকরাম রহমান।

এরপর অনেক সময় পেরিয়ে যায়।বৃদ্ধি পেতে থাকে ইদহান রহমানের বংশধর ও।

ধূসর বর্নের শার্টের বোতাম লাগাতে লাগাতে রুম থেকে বেরিয়ে আসে নিশাদ।ডাইনিং টেবিলে বসে রুটির অকোনা ছিড়ে ঝোলে লাগিয়ে মুখে পুরে উঠে দাঁড়ায়।তারপর হাত ধুয়ে মেইনডোরের দিকে এগিয়ে আসে।সোফায় বসে ইকরাম রহমান পেপার পড়ছেন।ছেলেকে বেরুতে দেখে জিজ্ঞেস করেন,

''কই যাস?"

''অফিসে।কিছু লাগবে?"

''না লাগবেনা।জলদি ফিরে আসবি।"

''জি আব্বা।"

বেরিয়ে আসে নিশাদ।ট্যাক্সির জন্য দাঁড়ায়।হঠাৎ পিছন থেকে কেউ দৌড়ে এসে নিশাদের পিছনে দাঁড়ায়।নিশাদ পিছে তাকিয়ে দেখে হুমায়রা।কপালের ঘাম মুছে উড়না ঠিক করে নিয়ে হুমায়রা বলল,

''ভাই সরি তোকে বলা হয়নি বেতনের কথা।আজকে লাস্ট ডেট।দিতে না পারলে রেজিষ্ট্রেশন করা যাবেনা।"

নিশাদ রেগে বলল,

'',পড়াশুনস করিস তুই।তোর কি সংসার দেখতে হয় না কাজ করতে হয়?আগে কেন বলতে পারিসনা?"

হুমায়রা আমতাআমতা করে বলল,

''বললামই তো মনে নেই।আর হবেনা।"

নিজের রাগকে সামলে নেয় নিশাদ।তারপর পকেট থেকে কড়কড়ে দুহাজার টাকা বের করে দিয়ে বলল,

''এখন বেতন টা দে।রেজিষ্ট্রেশনের টাকাটা পরে দিয়ে দিবো।"

''ওকে।"

''কয়দিন আছে রেজিষ্ট্রেশনের?"

''দুদিন আছে আর।আজই বেতনের লাস্ট ডেট ছিলো।"

''ওহ।পেয়ে যাবি।টেনসন নিবিনা।"

বলে বোনের মাথায় হাতবুলিয়ে দেয় নিশাদ হুমায়রা ভাইয়ের দিকে একটু হাসে।নিশাদ এবার একটা সিএনজি ডেকে নেয়।গাড়ি ওদের কাছে আসতেই নিশাদ বলল,

''খিলগাও যাবা?"

''হ যামু।"

''কতো নিবা?"

''১২০ টাহা দিয়েন।"

''আচ্ছা।হুমায়রা উঠ যাওয়ার সময় তোর কলেজ সামনে পড়বে।নেমে যাস।"

''জি ভাইয়া।"

হুমায়রা উঠে বসে সিএনজিতে।ওর পাশে এসে বসলো নিশাদ।অসিএনজি চলতে শুরু করে।নিশাদ ইকরাম রহমানের বড় ছেলে আর একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি।একটা প্রাইভেট কোম্পানীতে জব করে।৩০ হাজার টাকা বেতন পায় মাসে।তা দিয়ে সংসারের খরচ চালাতেই হিমশিম খেতে হয় ওকে।হুমায়রার কলেজ চলে আসে।বোনকে নামিয়ে দিয়ে অফিসের পথে রওনা হয় নিশাদ।উজ্জ্বল শ্যামলা আর গালে গালে খোঁচা দাঁড়ি আছে নিশাদের। বয়স তেত্রিশ হয়ে এলো কিন্তু চেহারায় তা ফুঁটে উঠেনি।চোখজোড়া ছোট আর বেশ জ্বলজ্বলে।উচ্চতা বডি ফিটনেস সব কিছুতে একদম পার্ফেক্ট।

খিলগাঁও এ ওর অফিসের সামনে এসে থামলো সিএনজি।ড্রাইভারের ভাড়া চুকিয়ে ভিতরে এসে লিফটের বোতাম চাঁপলো।ওর বস বোরহান মাহবুবের এ্যাসিস্ট্যানটের এ্যাসিস্ট্যান্ট ও।

চাকরিটা পেয়েছিলো এক দুঃসম্পর্কের আত্মীয়ের মাধ্যমে।

আজকাল টাকা ছাড়া কোন কিছুই পাওয়া যায়না।সেখানে আপনার রেজাল্ট আপনার পারদর্শিতা কোন কাজে আসেনা।টাকা থাকলেই জব হয়ে যাবে।

তিনতলায় আসতেই নেমে এলো নিশাদ।তারপর নিজের ডেস্কে এসেই জানতে পারলো বস ডেকেছে।ওর অবশ্য এমনিতেই বসকে লাগতো।এখন যেহেতু ডেকেছে তাহলে কথা বলা যাবে।

বসের কেবিনের সামনে এসে নক করলো নিশাদ।ভিতর থেকে মোটা গলায় কেউ বলল,

''আসুন।"

নিশাদ ভিতরে এসে দাঁড়ায়।বোরহসন মাহবুব দাঁড়িয়ে টাই ঠিক করতে করতে বলেন,

আপনি জানেন প্রত্যেক মাসে আমাদের দরিদ্র তহবিলে কিছু টাকা জমা করতে হয়।"

''জি স্যার।"

''তো আপনাকে ১০০০০ টাকা দিতে হবে।"

''আগের স্যার কখনোই আমার থেকে নিতেননা।আর আমার নিজের ও কিছু প্রবলেম আছে আর্থিক।বেতন ও পাইনি।"

''তো সেটা আপনার প্রবলেম মিঃ নিশাদ রহমান।আমাকে বলছেন কেন?আর আগের বস কি করতো না করতো সেটা তার ব্যাপার আমার না।"

''স্যার এমাউন্টটা একটু কমানো যায়না?"

''কেন?"

''আমার ছোট বোনের ইন্টার ফাইনালের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।দুদিন মাত্র সময়।বেতনটাও দরকার।"

''আচ্ছা ছয় হাজার টাকা দাও তোমার বেতন থেকে।আর কোন তর্ক চাইনা।"

নিশাদ আর কিছু বলতে পারেনা।বোরহান মাহবুব আবার ও বলেন,

''কি হলো যাও।তোমার এ্যাকাউন্টে টাকা পৌছে যাবে কাল।"

''জি স্যার।"

বেরিয়ে আসে নিশাদ।কপালের ঘামের পাশাপাশি চোখের পানিটা ও মুছে নেয়।তবে ও নিজেকে কখনোই ভেঙ্গে পড়তে দিবেনা।নিজের পরিবারের জন্য হলে ও শক্ত থাকবে ও।ডেস্কে এসে বসতেই বসের এ্যাসিস্ট্যান্ট ফারুজ খান বললেন,

''আজ কিন্তু তুমি লাঞ্চ করাবে।"

চমকে উঠে নিশাদ।তারপর অবাক করা কন্ঠে বলল,

''স্যার পরশুদিন ও লাঞ্চ করিয়েছিলাম।"

''তো কি হয়েছে আমার এ্যাসিস্ট্যান্ট তুমি।আমার কথামতোই চলতে হবে।তোমাকে খাওয়াতে হবে।"

নিশাদ পকেট থেকে একশটাকার নোট বের করে দীর্ঘশ্বাস ফেলল

chap-preview
Free preview
একটি পারিবারিক ও বাস্তবতার সাথে সম্পর্কিত ধারাবাহিক উপন্যাস।চরিত্রগুলোর সাথে বাস্তবতার কিছুটা মিল থাকায় আশা করি সবার ভালো লাগবে।
#রংধনু তাবাস্সুম রিয়ানা পর্বঃ০১ ___________ স্বপ্নচুড়া এলাকার রংধনু নিবাস বাড়িটির মালিক ছিলেন ইদহান রহমান।রক্ত ঘামে গড়েছিলেন এই শান্তির নিবাস। দু পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক হয়েছিলেন।মৃত্যুর আগে সম্পূর্ন সম্পদ ছেলে মেয়েদের দিয়ে যান যেন ওনার মৃত্যুর পরবর্তি সময়ে কোন দ্বন্ধ সংঘাতের সৃষ্টি না হয়।কিন্তু যখন সত্তুর বছর বয়সে মারা গেলেন তখনই প্রচন্ড লোভ উৎরে উঠলো ছোট পুত্র ইহসান রহমানের ভেতর।ইদহান রংধনু নিবাস পাঁচ কাঠা জমি আর পুকুরটা লেখে দিয়েছিলেন বড় সন্তান ইকরামের নামে।কিন্তু ইহসান রহমান মেনে নিতে পারেননা।যেখানে তাকে সম্পত্তি কোন অংশে কম দেয়া হয়নি।বড় ভাইয়ের আগে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন ইহসান রহমান।বিত্তশালী পরিবারের মেয়ে ফারিদা খানমকে বিয়ে করে নেন।একমাত্র কন্য হবার সুবাদে ফারিদা প্রচুর সম্পত্তি পান পিতার কাছ থেকে।কিন্তু ইহসান রহমান এতো সম্পত্তির পর ও কোনভাবেই ভাইয়ের সম্পত্তি থেকে নজর সরাতে পারেননা। ইকরাম রহমান ছিলেন বেশ সরল মনের কম শিক্ষিত এবং ভাই বোনের প্রতি দূর্বল।ওনার স্ত্রী জুলেখা বানু দরিদ্র পরিবারের সন্তান ছিলেন।ইহসান রহমান সেদিন ভাইয়ের গৃহে চলে আসেন উকিল সমেত।চেয়ে বসেন পুরো পাঁচকাঠা জমি।ইকরাম রহমানের মাথায় বাজ পড়ে।কিন্তু ওনাকে অনেকটাই অবাক করে দিয়ে ইহসান রহমান বলেছিলেন, ''এত সম্পত্তি দিয়ে কি করবে?আমাকে দিয়ে দাও।নাহলে এই বাড়ি খালি করবে।আমি বিক্রী করবো ।" ইকরাম ভেঙ্গে পড়েন।ছোট ভাইকে অনুনয় করে বলেন, ''এ বাড়ি বাবার হাতের।এমনটা করিস না।" ''এতো কথা বলিও না।সব তোমার চাল বুঝি তো।বাবার ঘরটাকে তুমি হাতানোর ধান্দা করছো মনে করছো কিছু জানিনা আমি তাইনা?" ইকরাম প্রচন্ড অবাক হন।এ লোক তার ভাই হতে পারেনা।কিভাবে কথা বলছে সে?ভাইকে অবিশ্বাস করছে।ইহসান নিজের সিদ্ধান্তে অটল।অনেক জোরাজুরি করে বাড়িটা আর এককাঠা জমি বাঁচালো ইকরাম রহমান। এরপর অনেক সময় পেরিয়ে যায়।বৃদ্ধি পেতে থাকে ইদহান রহমানের বংশধর ও। ধূসর বর্নের শার্টের বোতাম লাগাতে লাগাতে রুম থেকে বেরিয়ে আসে নিশাদ।ডাইনিং টেবিলে বসে রুটির অকোনা ছিড়ে ঝোলে লাগিয়ে মুখে পুরে উঠে দাঁড়ায়।তারপর হাত ধুয়ে মেইনডোরের দিকে এগিয়ে আসে।সোফায় বসে ইকরাম রহমান পেপার পড়ছেন।ছেলেকে বেরুতে দেখে জিজ্ঞেস করেন, ''কই যাস?" ''অফিসে।কিছু লাগবে?" ''না লাগবেনা।জলদি ফিরে আসবি।" ''জি আব্বা।" বেরিয়ে আসে নিশাদ।ট্যাক্সির জন্য দাঁড়ায়।হঠাৎ পিছন থেকে কেউ দৌড়ে এসে নিশাদের পিছনে দাঁড়ায়।নিশাদ পিছে তাকিয়ে দেখে হুমায়রা।কপালের ঘাম মুছে উড়না ঠিক করে নিয়ে হুমায়রা বলল, ''ভাই সরি তোকে বলা হয়নি বেতনের কথা।আজকে লাস্ট ডেট।দিতে না পারলে রেজিষ্ট্রেশন করা যাবেনা।" নিশাদ রেগে বলল, '',পড়াশুনস করিস তুই।তোর কি সংসার দেখতে হয় না কাজ করতে হয়?আগে কেন বলতে পারিসনা?" হুমায়রা আমতাআমতা করে বলল, ''বললামই তো মনে নেই।আর হবেনা।" নিজের রাগকে সামলে নেয় নিশাদ।তারপর পকেট থেকে কড়কড়ে দুহাজার টাকা বের করে দিয়ে বলল, ''এখন বেতন টা দে।রেজিষ্ট্রেশনের টাকাটা পরে দিয়ে দিবো।" ''ওকে।" ''কয়দিন আছে রেজিষ্ট্রেশনের?" ''দুদিন আছে আর।আজই বেতনের লাস্ট ডেট ছিলো।" ''ওহ।পেয়ে যাবি।টেনসন নিবিনা।" বলে বোনের মাথায় হাতবুলিয়ে দেয় নিশাদ হুমায়রা ভাইয়ের দিকে একটু হাসে।নিশাদ এবার একটা সিএনজি ডেকে নেয়।গাড়ি ওদের কাছে আসতেই নিশাদ বলল, ''খিলগাও যাবা?" ''হ যামু।" ''কতো নিবা?" ''১২০ টাহা দিয়েন।" ''আচ্ছা।হুমায়রা উঠ যাওয়ার সময় তোর কলেজ সামনে পড়বে।নেমে যাস।" ''জি ভাইয়া।" হুমায়রা উঠে বসে সিএনজিতে।ওর পাশে এসে বসলো নিশাদ।অসিএনজি চলতে শুরু করে।নিশাদ ইকরাম রহমানের বড় ছেলে আর একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি।একটা প্রাইভেট কোম্পানীতে জব করে।৩০ হাজার টাকা বেতন পায় মাসে।তা দিয়ে সংসারের খরচ চালাতেই হিমশিম খেতে হয় ওকে।হুমায়রার কলেজ চলে আসে।বোনকে নামিয়ে দিয়ে অফিসের পথে রওনা হয় নিশাদ।উজ্জ্বল শ্যামলা আর গালে গালে খোঁচা দাঁড়ি আছে নিশাদের। বয়স তেত্রিশ হয়ে এলো কিন্তু চেহারায় তা ফুঁটে উঠেনি।চোখজোড়া ছোট আর বেশ জ্বলজ্বলে।উচ্চতা বডি ফিটনেস সব কিছুতে একদম পার্ফেক্ট। খিলগাঁও এ ওর অফিসের সামনে এসে থামলো সিএনজি।ড্রাইভারের ভাড়া চুকিয়ে ভিতরে এসে লিফটের বোতাম চাঁপলো।ওর বস বোরহান মাহবুবের এ্যাসিস্ট্যানটের এ্যাসিস্ট্যান্ট ও। চাকরিটা পেয়েছিলো এক দুঃসম্পর্কের আত্মীয়ের মাধ্যমে। আজকাল টাকা ছাড়া কোন কিছুই পাওয়া যায়না।সেখানে আপনার রেজাল্ট আপনার পারদর্শিতা কোন কাজে আসেনা।টাকা থাকলেই জব হয়ে যাবে। তিনতলায় আসতেই নেমে এলো নিশাদ।তারপর নিজের ডেস্কে এসেই জানতে পারলো বস ডেকেছে।ওর অবশ্য এমনিতেই বসকে লাগতো।এখন যেহেতু ডেকেছে তাহলে কথা বলা যাবে। বসের কেবিনের সামনে এসে নক করলো নিশাদ।ভিতর থেকে মোটা গলায় কেউ বলল, ''আসুন।" নিশাদ ভিতরে এসে দাঁড়ায়।বোরহসন মাহবুব দাঁড়িয়ে টাই ঠিক করতে করতে বলেন, আপনি জানেন প্রত্যেক মাসে আমাদের দরিদ্র তহবিলে কিছু টাকা জমা করতে হয়।" ''জি স্যার।" ''তো আপনাকে ১০০০০ টাকা দিতে হবে।" ''আগের স্যার কখনোই আমার থেকে নিতেননা।আর আমার নিজের ও কিছু প্রবলেম আছে আর্থিক।বেতন ও পাইনি।" ''তো সেটা আপনার প্রবলেম মিঃ নিশাদ রহমান।আমাকে বলছেন কেন?আর আগের বস কি করতো না করতো সেটা তার ব্যাপার আমার না।" ''স্যার এমাউন্টটা একটু কমানো যায়না?" ''কেন?" ''আমার ছোট বোনের ইন্টার ফাইনালের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।দুদিন মাত্র সময়।বেতনটাও দরকার।" ''আচ্ছা ছয় হাজার টাকা দাও তোমার বেতন থেকে।আর কোন তর্ক চাইনা।" নিশাদ আর কিছু বলতে পারেনা।বোরহান মাহবুব আবার ও বলেন, ''কি হলো যাও।তোমার এ্যাকাউন্টে টাকা পৌছে যাবে কাল।" ''জি স্যার।" বেরিয়ে আসে নিশাদ।কপালের ঘামের পাশাপাশি চোখের পানিটা ও মুছে নেয়।তবে ও নিজেকে কখনোই ভেঙ্গে পড়তে দিবেনা।নিজের পরিবারের জন্য হলে ও শক্ত থাকবে ও।ডেস্কে এসে বসতেই বসের এ্যাসিস্ট্যান্ট ফারুজ খান বললেন, ''আজ কিন্তু তুমি লাঞ্চ করাবে।" চমকে উঠে নিশাদ।তারপর অবাক করা কন্ঠে বলল, ''স্যার পরশুদিন ও লাঞ্চ করিয়েছিলাম।" ''তো কি হয়েছে আমার এ্যাসিস্ট্যান্ট তুমি।আমার কথামতোই চলতে হবে।তোমাকে খাওয়াতে হবে।" নিশাদ পকেট থেকে একশটাকার নোট বের করে দীর্ঘশ্বাস ফেললো।আজ হয়ত পায়ে হেঁটে ঘরে ফিরতে হবে। একশটাকা দিয়ে মাঝারি সাইজের বিরিয়ানির প্যাকেট পাওয়া যেতে পারে। এদিকে ক্লাশ শেষ করে বেরিয়ে এলো সাঁঝ।দুটো টিউশানি করে ঘরে ফিরবে ও।বাসের জন্য দাঁড়িয়ে কাকে যেন কল করলো ও।দুবার রিং হতেই কল রিসিভ করলেন জুলেখা বানু। কানে ফোন রেখে সাঁঝ বলল, ''আম্মা আমি ক্লাশ থেকে বের হলাম।এখন টিউশানি করাতে যাবো।কিছু লাগবে তোমার?" ''প্রেশারের ঔষধ শেষ হয়ে গেছে।নিশাদ ও বাহির হয়ে গেল।" ''সমস্যা নাই আম্মা। আজকে বেতন দিবে।তো নিয়ে আসবো।" ''আচ্ছা।" সাঁঝ কল কেঁটে বাসে উঠে যায়।আজ বসার জায়গা নেই একদমই।অগত্যা দাঁড়িয়ে থাকতে হলো ওকে।সাঁঝ বেশ ফর্সা আর গোলগাল চেহারার অধিকারি।ছাত্রী হিসেবে ও খুব ভালো।দুটো টিউশানি করছে তবে বেতন থেকে নিশাদকে হেল্প করতে পারেনা ও কারন ওর যাতায়তেই সব খরচ হয়ে যায়।মাঝে মাঝে ভাইটার জন্য কষ্ট হয় ওর।ও যদি ভালো বেতন পেতো তাহলো নিশাদকে এতো কষ্ট করে ঘর চালাতে হতো না।রিদ্ধিকে পড়াতে এসেছে ফাহমিনাকে পড়িয়ে।রিদ্ধি সাঁঝের কানে কানে বলল, ''আপু আমার সাদেক মামা এসেছে সৌদি আরব থেকে।" ''ওহ।ভালো। " রিদ্ধি পড়তে শুরু করে।সাঁঝ ওর খাতা চেক করছে।তখনই পাশের রুম থেকে একজন লোক বেরিয়ে আসে।তাকে চেনে না সাঁঝ।লোকটা এসে বলল, ''রিদ্ধি ওনি তোর টিচার?" ''জি মামা ওনার নাম সাঁঝ।" সাঁঝ লোকটাকে ধীরে সালাম জানায়।লোকটা হেসে উত্তর দেয়।নিশাদ লাঞ্চ টাইমে বেরিয়ে আসে এ্যাসিস্ট্যান্ট কে নিয়ে।একটা বিরিয়ানী দোকানের সামনে দাঁড়ায় ওরা।ফুল বিরিয়ানী হলো একশত বিশ আর মাঝারি সাইজটা হলো ১০০।নিশাদ মাঝারি প্যাকেটটা অর্ডার করতেই পাশ থেকে ফারুজ বললেন, ''মাঝারি প্যকেট দিয়ে কি হয় বলোতো?" নিশাদ বলল, ''স্যার এটাই একা খেতে পারবেননা আপনি।" ''তুমি ও ভাগ বসাতে চাইছো আমার বিরিয়ানীতে?" ''না স্যার সেটা না।" ''তো?" নিশাদের রাগ লাগছে।লোকটা কেন এমন করছে?ওনাকে প্রায়ই খাওয়ায় ও।তারপর ও এতো লোভ।অবশ্য চাকরিটা দেয়ার আগে ওকে বলা হয়েছিলো রেগে গেলে চাকরিটা থাকবেনা। চলবে

editor-pick
Dreame-Editor's pick

bc

Dominating the Dominatrix

read
52.6K
bc

The Luna He Rejected (Extended version)

read
552.5K
bc

The Slave Mated To The Pack's Angel

read
378.2K
bc

Secretly Rejected My Alpha Mate

read
17.7K
bc

Claimed by my Brother’s Best Friends

read
784.1K
bc

The Lone Alpha

read
123.0K
bc

The CEO'S Plaything

read
15.2K

Scan code to download app

download_iosApp Store
google icon
Google Play
Facebook